BCS Written Preparation......
বিসিএস প্রস্তুতিঃ বাংলা ভাষা
এ, জেড, এম তৈমুর রহমান (শাওন)
সহকারী পুলিশ সুপার
মেধাক্রম ১২ তম
৩১ তম বিসিএস
বাংলাদেশ পুলিশ।
BCS Preparation- বিসিএস প্রস্তুতিঃ বাংলা ভাষা :
বাংলা ভাষা অংশ থেকে প্রশ্ন থাকবে ১৫ টি। তাঁর মধ্যে রয়েছে বাংলা ভাষার প্রয়োগ-অপ্রয়োগ, বানান ও বাক্য শুদ্ধি, পরিভাষা, সমার্থক ও বিপরীতার্থক শব্দ, ধ্বনি, বর্ণ, শব্দ, পদ, বাক্য, প্রত্যয়, সন্ধি ও সমাস। এখানে মুলত ব্যাকরণ অংশ থেকেই প্রশ্নের বিন্যাস করা হয়েছে। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা হলেও বাংলা ব্যাকরণ কোনো সহজ জিনিস না। ইংরেজি গ্রামারের চেয়ে বাংলা ব্যাকরণ কঠিক - এই কথা স্কুল জীবনে পণ্ডিত মশাইয়ের কাছে বহুবার শুনেছি। আজকের বাংলা ভাষা অনেক দুর্বোধ্য ভাষা চক্র অতিক্রম করে এই পর্যায়ে এসেছে। প্রাকৃত, অপভ্রংশের পর্যায় পেরিয়ে সংস্কৃতের মধ্য দিয়ে প্রমিত বাংলার বর্তমান রূপ।
ভাষা গতিশীল। নদীর মতো। ভাষা কখনো এক জায়গায় থেমে থাকে না। আজকের প্রমিত বাংলাও তাই এক সময় নতুন রূপ পাবে। দেড় হাজার বছর পূর্বের চর্যাপদ পড়ে আমরা আজও কিছু বুঝতে পারি না। মুনি দত্তের কাছ থেকে ব্যাখ্যা জানতে হয়। তেমনি হয়তো আমাদের লেখা পড়েও হাজার বছর পরের কোনো বাঙালি বুঝতে পারবে না। তবুও আমাদের চর্যাপদ পড়তে হয়। ভাষার বিভিন্ন রূপভেদ পড়তে হয়। ভাষার উৎস জানতে হয়। কোনটি তৎসম, কোনটি তদ্ভব, কোনটি দেশি শব্দ জানতে হয়। ঔপনিবেশিক শাসনের উৎসেচক হিসাবে ঢুকে পরা কিছু বিদেশি শব্দও শিখতে হয়।
ভাষার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এক প্রয়োগবিধি। কোন শব্দের পরে কোন শব্দ বলতে হবে, উপমার সঠিক প্রয়োগ, শব্দের বানান, শুদ্ধভাবে বলা, একই শব্দের নানারূপ, শব্দের বিপরীত অর্থ ইত্যাদি জানার পাশাপাশি জানতে হবে।
ভাষার কিছু মৌলিক বিষয়- ধ্বনি < বর্ণ < শব্দ, পদ < বাক্য।
জানতে হবে বাক্যের আকাংখা, আসত্তি, যোগ্যতা। গুরুচণ্ডালী দোষ। প্রবাদ, প্রবচন, এক কথায় প্রকাশ, বাগধারা ইত্যাদি।বাংলা ভাষার উৎসমূল সংস্কৃতের গঠনতন্ত্রের সেই ণ-ত্ব বিধান, ষ-ত্ব বিধান, প্রকৃতি-প্রত্যয়, সন্ধি এবং সমাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।
যাই হোক, সিলেবাস বিষয়ে অনেক জ্ঞানগর্ভ আলোচনা হলো। এতোক্ষনে আপনাদের মাথা বনবন করে ঘোরার কথা। মাথা আমারও ঘুরছে। এতোকিছু কিভাবে পড়বো ? ঠিক আছে, এবার চলুন কিভাবে পড়বো সেই আলোচলায় যাই -
বাংলা ব্যাকরণ (নবম-দশম শ্রেণি)
এই বইটি সিলেবাসের ৮০ ভাগ কভার করবে। অত্যন্ত সংক্ষিপ্তাকারে গুছিয়ে লেখা একটা বই। আমাদের পাঠ্য-পুস্তক নিয়ে যারা অভিযোগ করেন, তাঁদের এই বইটা অবশ্যই পড়া উচিত। এই বইটি রচনাতে যাদের অবদান রয়েছে, তাঁদের একটা ধন্যবাদ অবশ্যপ্রাপ্য। বইটি পড়া শুরু করুন। আজই শুরু করুন। একদম প্রথম পৃষ্ঠা থেকে। ছোট বই। পড়তে বেশিক্ষণ লাগবে না। এই বইটা কয়েকবার পড়ুন। যত বেশি পড়বেন, ততো সহজ হবে।
শাহ আলম স্যার
একজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা নিয়ে আমার মনে কোনো দ্বিধা কাজ করছে না। অনেকে অনেক কিছু মনে করতে পারেন, ভাবতেই পারেন পাবলিসিটি নামক কোনো বিষয়। তাতে আমার কোনো সংকোচ নেই। আপনাদের কারো কারো কিঞ্চিত উপকার করার স্বার্থে এই লেখা। আপনাদের মধ্যে অন্তত একজনও যদি এই লেখা পড়ে একটু দিকনির্দেশনা পান, তাতে আমার প্রতি অন্যদের যে কোনো রকম হিংসা, দ্বেষ নিয়ে আমি মাথা ঘামাবো না।
এই ভদ্রলোক বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে ক্লাস নেন। পেশায় আইনজীবী। তাঁর কাছে ক্লাস করার পর আমার মনে হয়েছে, তাকে আমি স্কুলে কেন পাইনি। এসএসসি পরীক্ষার সময় যদি পেতাম !! মোট দশ-থেকে বারোটি ক্লাস নেন। আমি যে তাঁর ক্লাস কতোবার করেছি ! একই ক্লাস অসংখ্যবার করেছি।
ধ্বনি, বর্ণ, শব্দ, পদ, বাক্য, ণ-ত্ব বিধান, ষ-ত্ব বিধান, প্রকৃতি-প্রত্যয়, সন্ধি এবং সমাস সম্পর্কে তাঁর ক্লাসগুলো অসাধারণ। ব্যাকরণ বই পড়ে অনেক কিছুই হ্য়তো বুঝতে পারবেন না। বিশেষ করে প্রকৃত ও প্রত্যয় সম্পর্কে বই পড়ে কিছুই বুঝবেন না। এই জিনিস যে বুঝে পড়া যায়, আমি তাই জানতাম না। স্যারের প্রতিটি ক্লাসে আমার নিজের হাতে নোট করা আছে।
স্যারের ক্লাস নোট আর নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ বই- এই দুইটি জিনিস ছিল আমার বাংলা ব্যাকরণের মূল প্রস্তুতি অনুষঙ্গ।
ব্যাস, ব্যাকরণের ভিত্তি-কাঠামো প্রস্তুত হয়ে গেল। এবার আসুন, একে পলিশ করি, কালারফুল করি!
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসাঃ
ড. সৌমিত্র শেখরের লেখা বই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক। বইটি তিনি বিশেষভাবে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্যেই লিখেছেন। বাংলা ভাষার প্রয়োগ-অপ্রয়োগ, বানান ও বাক্য শুদ্ধি, পরিভাষা, সমার্থক ও বিপরীতার্থক শব্দ ইত্যাদি বিষয়গুলো এই বই থেকে পড়তে পারেন।
সুশান্ত পাল: স্বাগত হে স্বপ্ন....
সুশান্ত পাল
৩০ তম বিসিএস
বিসিএস কাস্টমস
সম্মিলিত মেধাতালিকায় ১ম স্থান
আইবিএ ভর্তি পরীক্ষায় ১ম।
BCS Written-স্বাগত হে স্বপ্ন
ধুলোর ঝড়ের মধ্যে চোখ বন্ধ করে হাঁটাটা যতটা বিপত্তিকর, তার চেয়েও অনেক বেশী কষ্টের, যখন দেখি, ঝড় থেমে গেছে, অথচ শুধু হাঁটতে শিখিনি বলেই যে পথে অনেকেই হেঁটে গেছে, সে পথ আমার আর পেরুনো হলনা ৷ ফিনিক্স পাখির উপমা যদি বেশী বাড়াবাড়ি মনে না হয়, তাহলে বলা যায় যে এ পাখির মতনই আমাদের স্বপ্ন বারবার মরে এবং বাঁচে৷ স্বপ্নেরা কখনো কখনো ভেঙে যায়, দূরে ভেসে হারিয়ে যায় না ৷ মাঝে মাঝে নিজের অস্তিত্বকেই অতিথি মনে হয় ৷ যে অন্ধকারের মধ্যে ডুবে আছি তাকে নিয়েই গান গাইবার বড্ড সাধ হয় ৷ ভেতরের ক্লান্ত ‘আমি’টা বিদ্রোহ করে যেন, আমি ওকে থামিয়ে দিই----সচেতনভাবেই ৷
একটা ছোটো পালতোলা নৌকা, ভাসছে সমুদ্রের বুকে৷ রোমাঞ্চকর এই আপাতনিরুদ্দেশ যাত্রার প্রথম সীমাটি আপনারা পার হয়েছেন ৷ অভিনন্দন ৷ এখন সময় এসেছে বৃহতের সামনে দাঁড়ানোর, স্বপ্ন-ছোঁয়ার শিহরণটুকু নেয়ার পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণের ৷ আপনার স্বপ্ন নিয়ে ভাবুন, স্বপ্নও আপনাকে নিয়ে ভাববে৷ অন্য কিছু নিয়ে ভাববার সময়টুকুতে ধরে নিন আপনি কিছুই ভাবছেন না ৷ ভাবনার এই সময়োচিত সংকীর্ণতাটুকু আপনাকে অনেক দূর নিয়ে যাবে---এতে কোন সন্দেহ নেই ৷
প্রথমেই পড়ে ফেলুন ১০ম থেকে ৩২তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সব প্রশ্নোত্তর ৷ ভালোভাবে স্টাডি করুন বারবার ৷ প্রশ্নের ধরণ সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা নিন ৷ যুদ্ধে যাবার আগে নিজের দুর্বল ও সবল দিকগুলো জানা থাকলে প্রস্তুতি নেয়া সহজ হয় ৷ যেকোন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ভালো করতে হলে কী কী পড়তে হবে তা জানার চাইতে অনেক বেশী জরুরী কী কী বাদ দিয়ে পড়বেন, সেটা ঠিক করা ৷
সব কিছু পড়ার সহজাত লোভ সামলান ৷ শতভাগ প্রস্তুতি নিয়ে বিসিএস পরীক্ষা দেয়া কারো পক্ষেই সম্ভব নয় ৷ একটি অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন একবার পড়ার চেয়ে প্রয়োজনীয় প্রশ্নগুলো বারবার পড়া অনেক ভালো ৷
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ইংরেজি, গণিত ও মানসিক দক্ষতা, বাংলা---এই চারটি বিষয়ের উপর বেশী জোর দিন ৷ লিখিত পরীক্ষায় কিছু প্রশ্ন আসে যেগুলোর উপর প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারা বা না থাকতে পারা অনেকখানি নির্ভর করে ৷ এ ধরণের প্রশ্নের মধ্যে রয়েছে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন, টীকা, শর্ট নোট, সারাংশ, সারমর্ম, ভাবসম্প্রসারণ, অনুবাদ, ব্যাকরণ ইত্যাদি ৷
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বাংলাদেশ বিষয়াবলি, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি,এই বিষয়গুলোতে প্রয়োজনীয় চিহ্নিত চিত্র ও ম্যাপ আঁকুন ৷ যথাস্থানে বিভিন্ন ডাটা, টেবিল, চার্ট প্রদান করুন ৷
নিয়মিত পেপার পড়ুন৷ সম্ভব হলে অন্তত ৫-৬ টা ৷ অনলাইনে পড়তে পারেন ৷ এই সময়টাতে পুরো পেপার না পড়ে শুধু যে অংশগুলো লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়, সেগুলোই পড়ুন ৷
গাইড বই পড়ুন৷ সম্ভব হলে, অন্তত ৩-৪ সেট৷ তবে খেয়াল রাখবেন গাইডে অনেক ভুল থাকে ৷ এটা স্বাভাবিক ৷ তাই পড়ার সময় সংশোধন করে নিতে হবে ৷
বিভিন্ন রেফারেন্স, টেক্সট ও প্রামাণ্য বই অবশ্যই পড়তে হবে ৷ বিসিএস পরীক্ষায় অনেক প্রশ্নই কমন পড়েনা ৷ এসব বই পড়া থাকলে উত্তর করাটা সহজ হয় ৷
প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় বিভিন্ন লেখকের রচনা, পত্রিকার কলাম ও সম্পাদকীয়, সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারা, বিভিন্ন রেফারেন্স থেকে উদ্ধৃতি দিলে মার্কস বাড়বে ৷ এই অংশগুলো লিখতে নীল কালি ব্যবহার করলে সহজে পরীক্ষকের চোখে পড়বে ৷
নোট করে পড়ার বিশেষ প্রয়োজন নেই ৷ এতটা সময় পাবেন না ৷ বরং কোন প্রশ্নটা কোন সোর্স থেকে পড়ছেন, সেটা লিখে রাখুন ৷ রিভিশন দেয়ার সময় কাজে লাগবে ৷
বাংলাদেশের সংবিধানের ব্যাখ্যা, বিভিন্ন সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, কিছু আন্তর্জাতিক পত্রিকা ইত্যাদি সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখুন ৷ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে রাখুন ৷ প্রয়োজনমত পরীক্ষার খাতায় রেফারেন্স উল্লেখ করে উপস্থাপন করুন ৷
লেখা সুন্দর হলে ভালো, না হলেও সমস্যা নেই ৷ পরীক্ষায় অনেক দ্রুত লিখতে হয় ৷ তাই, প্রতি ৩-৫ মিনিটে ১ পৃষ্ঠা লেখার প্র্যাকটিস্ করুন ৷ খেয়াল রাখবেন, যাতে লেখা পড়া যায় ৷ সুন্দর উপস্থাপনা মার্কস বাড়ায় ৷
কোনভাবেই কোন প্রশ্ন ছেড়ে আসবেন না ৷উত্তর জানা না থাকলে ধারণা থেকে অন্তত কিছু লিখে আসুন ৷ আপনি প্রশ্ন ছেড়ে আসছেন, এটা কোন সমস্যা না ৷ সমস্যা হল, কেউ না কেউ সেটা উত্তর করছে ৷
নিজের সাজেশনস্ নিজেই তৈরী করুন ৷কারো সাজেশনস্ ফলো করবেন না ৷এই প্রশ্নটা আসবেই আসবে,এ জাতীয় মিথ্যে আশ্বাসে কান দেবেন না ৷
যেকোন প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে ননস্টপ লেখার দক্ষতা অর্জন করুন ৷ পড়ার অভ্যাস বাড়ান ৷ এতে আপনার লেখা মানসম্মত হবে ৷
কোন উত্তর মুখস্থ করার দরকার নেই ৷ বরং একাধিকবার পড়ুন ৷ ধারণা থেকে লেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন ৷
কোন ভাষায় উত্তর লিখবো? ইংরেজিতে? নাকি, বাংলায়? এ প্রশ্ন অনেকেরই ৷ আমি বাংলায় লিখেছি ৷ এ ভাষায় ‘আসি’ বলে স্বচ্ছন্দে চলে যাওয়া যায়---কী আশ্চর্য রহস্য! তাই না? তবে, আপনি ইংরেজিতেও লিখতে পারেন ৷ এক্ষেত্রে সাবলীলতা ও প্রাঞ্জলতাই মুখ্য ৷
অনেকেই বলবে, আমার তো অমুক অমুক প্রশ্ন পড়া শেষ! ব্যাপারটাকে সহজভাবে নিন ৷ আপনার আগে কেউ কাজ শেষ করলেই যে শেষ হাসিটা উনিই হাসবেন---এমন তো কোন কথা নেই ৷
মাঝে মাঝে পড়তে ইচ্ছে করবে না, আমারও করত না ৷ সারাক্ষণ পড়তে ইচ্ছে করাটা মানসিক সুস্থতার লক্ষণ না ৷ হোয়াই সো সিরিয়াস? তাই, ব্রেক নিন, পড়াকে ছুটি দিন ৷ মাঝেমধ্যেই ৷ দু’দিন পড়া হলো না বলে মন খারাপ করে আরো দু’দিন নষ্ট করার তো কোন মানে হয়না ৷ সেই দু’দিন বরং পড়ুন ৷ অনুশোচনা করার সময় কোথায়?
অনেক বকবক করলাম ৷ এবার একটি গল্প হোক ৷ পড়ুন, ভাবুন ৷
শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে একটা ছোট্ট পাখি সাইবেরিয়া ছেড়ে যাচ্ছিল ৷ হঠাৎ পাখিটা জমে গিয়ে বরফের টুকরোর মতন টপ্ করে মাটিতে পড়ে গেল ৷বেশ কিছু সময় পরে সেই পথ দিয়ে একটা গরু হেঁটে যাওয়ার সময় পাখিটার উপর মলত্যাগ করল ৷ কিছুক্ষণ পর গোবরের উষ্ণতায় পাখির গায়ের সমস্ত বরফ ঝরে গেল ৷ পাখিটা তখন খুশীতে গান গাইতে শুরু করল৷ কাছেই একটা বেড়াল বসেছিল ৷ গান শুনে বেড়ালটা গোবর থেকে পাখিটাকে বের করে খেয়ে ফেলল ৷
এই গল্পের লেসন গুলো কি কি?
যারা আমাদের উপরে ময়লা ছিটিয়ে দেয় অর্থাৎ আমাদের বকা-ঝকা করেন, তাদের সবাই কিন্তু আমাদের শত্রু নন; অনেকেই আমাদের ভালো চান ৷ এই দলে আছেন, আমাদের বাবা-মা, সিনিয়ররা, স্যাররা ৷
অনেকেই আছেন যাঁরা আমাদের বিপদ থেকে মুক্ত করার কথা বলে হাত বাড়িয়ে দিয়ে আরো বড় বিপদে ফেলে দেন ৷ তাঁরা বলেন, “তোমাকে দিয়ে বিসিএস হবেনা৷ তার চেয়ে অন্য কিছু কর ৷” আমি মনে করি, আপনি যদি কাউকে কোন ব্যাপারে সাহায্য করতে না পারেন, তবে তাকে সে ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করার কোন অধিকার আপনার নেই ৷
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, যখন আপনি বিপদে আছেন, তখন সবসময় আপনার মুখ বন্ধ রাখবেন ৷ রেজাল্ট বের হওয়ার আগের ১ - ১.৫ বছর মুখ বন্ধ রেখেছি ৷ অনেক কথা জমে গেছে; সেই কথাগুলোই এখন আপনাদের বলছি ৷ আপনার সাফল্য সবার মুখ বন্ধ করে দিতে পারে ৷ তাই, নিজের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিন; অন্যদের প্রতি নয় ৷
জীবনটা যেন পৃথিবীর সমস্ত দূরপাল্লার দৌড়বীরদের জুতোর মতন ৷ তাকে ছোটাতে হয় ৷ তবু জীবন মাঝে মাঝে থমকে যায় ৷ হঠাৎ নিজেরই পরসত্তা ভিন্ন দর্পণে সামনে এসে যায় যেন! মুক্তি অনিশ্চিত জেনেও মুক্ত হওয়ার আকুতি----যতটা অনর্থক, ততটাই তীব্র ৷ নাম-পরিচয়হীন থাকার যে কী যন্ত্রণা, সেটা আমি খুব ভালোভাবে বুঝি ৷ বিশেষ করে, যখন আশে-পাশের সবাই চাইছে, আমি এমন কিছু একটা হয়ে যাই, যা আমি হতে চাইছি না, তখন নিজেকে খুব অসহায় মনে হয় ৷ শাণিত যুক্তির ঝলকানির চেয়ে অধিগত চেতনার স্ফূরণ বেশি প্রভাব বিস্তারকারী ৷ বলতে পারেন, মনোগত কৈবল্যকে একেবারে ওলট-পালট করে দেয় ৷ আমার ধারণা, অন্তর্গত চেতনার কাছে যুক্তির অসহায়ত্বেই আত্মিক মুক্তি ঘটে ৷ আমার ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে ৷ সাফল্যের জন্যে আত্মবিশ্বাস জরুরী, নাকি আত্মবিশ্বাসের জন্যে সাফল্য জরুরী----এই দ্বন্দ্বে কেটেছে বহুদিন ৷ ভেবেছিলাম, বুঝি হারিয়েই যাবো! কঠিন সময়ের স্রোতে শুধু কঠিন মানুষগুলোই টিকে থাকে----এই বোধটুকু কাজ করত সবসময় ৷ নিয়তি সহায় হয়েছে ৷ আমি হারাইনি! স্বপ্ন নির্মাণ করুন ৷ তাকে স্পর্শকের স্পর্ধায় ছুঁয়ে ফেলার শপথ নিন ৷
স্বাগত হে স্বপ্ন ৷
বিসিএস প্রস্তুতিঃ বাংলা সাহিত্য
এ, জেড, এম তৈমুর রহমান (শাওন)
সহকারী পুলিশ সুপার
মেধাক্রম ১২ তম
৩১ তম বিসিএস
বাংলাদেশ পুলিশ।
BCS Written- বিসিএস প্রস্তুতিঃ বাংলা সাহিত্য
বাংলা থেকে প্রশ্ন থাকবে ৩৫ টি। নতুন এই সিলেবাসের আলোকে আসুন বাংলা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাক।
বাংলা বিষয়টিকে আমরা ২টি অংশে ভাগ করতে পারি-
১। বাংলা সাহিত্য ২। বাংলা ব্যাকরণ
বাংলা সাহিত্যঃ
নতুন সিলেবাসের আলোকে বাংলা সাহিত্য অংশ থেকে প্রশ্ন থাকবে ২০ টি। প্রাচীন ও মধ্যযুগ থেকে ৫ টি এবং আধুনিক যুগ থেকে ১৫টি। আপনাদের অনেকেরই বাংলা বিভিন্ন উপন্যাস, কবিতা, গল্প পড়া থাকতে পারে। আসলে সাহিত্য নিয়ে আমাদের সকলেরই কম বেশি আগ্রহ থাকে। আমার নিজেরও বাংলা সাহিত্য নিয়ে আগ্রহ ব্যাপক। ব্যাপক আগ্রহের কারণে আমার আত্মবিশ্বাসও অনেক বেশি ছিল। এই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণে আমাকে অতিরিক্ত জরিমানাও দিতে হয়েছে। সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসতাম। বাসায় এসে দেখি অসংখ্য ভুল করে এসেছি। দু চারটা গল্পের বই পড়লেই আসলে সাহিত্যের সবকিছু জানা হয়ে যায় না।
বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। এই ভাষায় কথা বলা থেকে শুরু করে অনেক প্রবাদ, প্রবচন, নীতিবাক্য, সংক্ষিপ্ত রূপ ইত্যাদি শিখেছি। তবুও বিসিএসের জন্য সাহিত্যের ধারণা সঠিকভাবে এবং সময়োপযোগী ভাবে নিতে হবে। বাংলা সাহিত্যের প্রস্তুতি শুরু করার জন্য প্রথমেই যে বইটি পড়বেন-
লাল নীল দীপাবলিঃ
ড. হুমায়ূন আজাদের লেখা এই বইটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস থেকে শুরু করে এর ক্রমবিকাশ সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা দেবে। হুমায়ূন আজাদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক। তাঁর লেখা নানা সময়ে আলোচিত, সমালোচিত হয়েছে। তিনি এই ধরণের তথ্য মূলক একটা বই কেন লিখলেন ঠিক জানি না। তবে বইটি বিসিএস পরীক্ষার্থীদের যে অশেষ উপকার করেছে সে কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। এরপর শুরু করবেন –
পাঠ্য-পুস্তকঃ
প্রথম শ্রেণী থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্য পুস্তকগুলো একবার চোখ বুলিয়ে যান। বিসিএস আসলে স্কুল জীবনের ভিত্তির উপর একটা পরিণত পর্যায়ের পরীক্ষা। পাঠ্য-পুস্তকগুলোর কবিতা ভালো করে পড়ুন।
নবম-দশম শ্রেণীর পাঠ্য-পুস্তকে দেখবেন কবি/লেখক পরিচিতি দেওয়া আছে। এইগুলো গভীর মনোযোগ দিয়ে বারবার পড়ুন। পরবর্তী পর্যায়ে যখন বিভিন্ন গাইড/নোট পড়তে যাবেন, তখন সেই বইগুলোর তথ্যগত ভুল/প্রিন্টিং মিসটেক সহজেই ধরতে পারবেন। অন্যথায় নিজের অজান্তেই ভুল পড়বেন। ভুলটাই শিখে যাবেন। পরীক্ষার হলে ভুল করে আসবেন জানতেও পারবেন না। এরপর শুরু করবেন-
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসাঃ
বিসিএসের বিশেষ প্রস্তুতি শুরু হলো এবার। ড. সৌমিত্র শেখরের লেখা বই। তিনিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক। বইটি তিনি বিশেষভাবে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্যেই লিখেছেন। মধ্যযুগের সাহিত্যের চমৎকার সংক্ষিপ্তসার পাওয়া যাবে বইটিতে। এছাড়া আধুনিক যুগের কবি-সাহিত্যিকদের জীবনীর গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে। এবারে আসা যায়, বিগত বছরের প্রশ্ন সামাধানে। বিশেষ অনুরোধ, উপরের বইগুলো না পড়ে ভুলেও কেউ বিগত বছরের প্রশ্ন সমাধানে যাবেন না।
প্রফেসর'স জব সলুশনঃ
এই বই থেকে বিগত বছরের সবগুলো প্রশ্নের উত্তর পড়বেন। প্রতিটি প্রশ্নের নিচে ব্যাখ্যাসহ উত্তর দেওয়া আছে, ব্যাখ্যাসহ উত্তর পড়বেন। বারবার পরবেন। ব্যাস, আপনি এবার মোটামুটি বিসিএসের বাংলা সাহিত্য অংশের জন্য প্রস্তুত হলেন। এবার প্রস্তুতিটাকে অলংকারিত করুন। শুরু করুন-
MP3: সচিত্র পুস্তক। সুখপাঠ্য। প্রাথমিক ধারণা লাভের পর এই বইটি পড়তে ভীষণ ভালো লাগবে। দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে। আবার পড়বেন। আরো দ্রুত শেষ করবেন। এভাবে পরীক্ষার আগেরদিন পর্যন্ত।
কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সঃ
আজ থেকেই শুরু করুন। প্রথম পৃষ্ঠা থেকে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত।
জাতীয় দৈনিক (যেমন প্রথম আলো);শুক্রবারের সাহিত্য সাময়িকী। এছাড়াও বিভিন্ন কবির জন্মজয়ন্তী, মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রকাশিত ক্রোড়পত্র মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
উপন্যাস/ কবিতা/ ছোটগল্পঃ
এই পর্যন্ত যে সকল গল্প-উপন্যাস-কবিতার শুধু নাম পড়েছেন, সুযোগ পেলে বইটিও পড়ে ফেলুন। বই পড়লে কারো সময়ের অপচয় হয় না।
How to Prepare for the Written Exam
এ, জেড, এম তৈমুর রহমান (শাওন)
সহকারী পুলিশ সুপার
মেধাক্রম ১২ তম
৩১ তম বিসিএস
বাংলাদেশ পুলিশ।
সহকারী পুলিশ সুপার
মেধাক্রম ১২ তম
৩১ তম বিসিএস
বাংলাদেশ পুলিশ।
BCS written:How to Prepare for the Written Exam
সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও আকর্ষণীয় সরকারি চাকরির জন্য বিসিএস লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে সামনে। যেটিতে তীব্র প্রতিযোগিতা করেই টিকতে হবে। এ পরীক্ষার মাধ্যমে জেনারেল বা সাধারণ, প্রফেশনাল অথবা টেকনিক্যাল এবং শিক্ষা ক্যাডার মিলিয়ে অল্প সংখ্যক বিসিএস ক্যাডার নিয়োগ দেওয়া হবে। সুতরাং হাজার হাজার প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে কাঙ্ক্ষিত নিশ্চয়তা ও মর্যাদাপূর্ণ এই চাকরি পেতে হলে ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় দুর্দান্ত ফল বয়ে আনতে হবে। এ জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং নিতে হবে ভালো প্রস্তুতি।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, "বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা একটি কঠিন প্রক্রিয়া। মৌলিক ধারণা থাকলে এ পরীক্ষায় ভালো করা যায়" তবে এ জন্য প্রথম থেকেই একটু পরিকল্পনা থাকা দরকার।
লিখিত পরীক্ষার খুঁটিনাটি: বিসিএস পরীক্ষার প্রথম ধাপ প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হওয়া প্রতিযোগীদের ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা দিতে হয়। এর মধ্যে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে ১০০ করে ২০০ নম্বর; ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে ১০০ করে ২০০ নম্বর; সাধারণ জ্ঞানে বাংলাদেশবিষয়ক প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে ১০০ করে ২০০ নম্বর; আন্তর্জাতিক বিষয়ে ১০০ নম্বর; গণিত ও মানসিক দক্ষতায় ৫০ নম্বর করে মোট ১০০ নম্বর এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ৫০ করে ১০০ নম্বর রয়েছে।
তবে যাঁরা শিক্ষা ক্যাডার কিংবা টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ক্যাডারে পরীক্ষা দিতে চান, তাঁদের আলাদা করে বিষয়ভিত্তিক ২০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হবে। সে জন্য তাঁদের অবশ্য বাংলা দ্বিতীয় পত্রের ১০০ নম্বর এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হবে না।
কেমন হবে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি: ইতিপূর্বে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া কয়েকজন বলেন, এ প্রতিযোগিতায় প্রতিটি বিষয়কেই সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ২৭তম বিসিএসে এএসপি (পুলিশ) হওয়া মোহাম্মাদ রাশেদ আহম্মেদ বলেন, "প্রিলিমিনারি পরীক্ষাকে খসড়া বাছাই বলা যেতে পারে। কিন্তু মূল যাচাই-বাছাই হয় লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে। কেবল হঠাৎ করে বই নিয়ে বসেই বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব নয়। এ জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে পড়াশোনা করতে হয়। পড়তে হবে অনেক বই। তবে পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্যান্য বিষয়েও মৌলিক কিছু ধারণা থাকা জরুরি। নিয়মিত বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা পড়তে হবে। আর সাহিত্যের বই আগে ভাগে পড়ে নেওয়াই ভালো।"
বাংলা বিষয়ে প্রশ্নের ধারা: ২৮তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে উত্তীর্ণ মোহাম্মাদ মোরশেদুর রহমান জানান,"গত কয়েক বছরের প্রশ্নপত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এখন আর নিছক বিখ্যাত লেখকদের বইয়ের নাম ও উল্লেখযোগ্য রচনা বিষয়ে প্রশ্ন আসে না। বরং বিখ্যাত কোনো লেখকের গল্প বা উপন্যাসের কোনো বিশেষ চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা আসতে পারে। প্রাচীন ও মধ্যযুগের সাহিত্য সম্পর্কে যেকোনো ধরনের ছোট প্রশ্ন আসতে পারে। বিভিন্ন সময়ের প্রেক্ষাপটের আলোকে সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য চরিত্র এবং সময়ের বিবর্তনে সাহিত্যে যে পরিবর্তন এসেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন হতে পারে। এ ছাড়া প্রথম পত্রের ব্যাকরণের অংশটা ভালো করে পড়তে হবে। কেননা ব্যাকরণ অংশে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। অন্যদিকে, বাংলা দ্বিতীয় পত্রের জন্য ভাবসম্প্রসারণ, সারাংশ,চিঠি, প্রবন্ধ ও দুটি রচনা ভালোভাবে লিখতে পারলে অনেক নম্বর তোলা সম্ভব।"
ইংরেজিতে ভালো দখল থাকতে হবে: ইংরেজি যেহেতু বিদেশি ভাষা, সেহেতু এটি আয়ত্ত করতে সময় লাগে। তাই চেষ্টা চালাতে হয় আগে থেকেই। ২৯তম বিসিএসে এএসপি (পুলিশ) হওয়া আবদুল্লাহিল কাফি বলেন, "ইংরেজি দুই পত্রে ভালো করতে দরকার শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ করা। কেননা শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ হলেই শূন্যস্থান পূরণ, ইংরেজি থেকে বাংলা এবং বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ করাটা অনেক সহজ হয়ে যায়। ইংরেজির জন্য অ্যাম্পলিফিকেশন, সাবস্ট্যান্স রাইটিং, গ্রুপ ভার্ব, ফ্রেজ, ইডিয়মস, ন্যারেশন, ভয়েস চেঞ্জ, সেনট্যান্স কারেকশন, প্রিপোজিশন—এসবে ভালো দখল থাকতে হবে। ইংরেজি প্রথম পত্রে ব্যাকরণের ২৫ নম্বরের সঠিক উত্তর দিতে পারলেই ভালো নম্বর চলে আসে। ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রে প্যাসেজ, লেটার ও রচনা লেখায় জোর দিতে হবে। তবে শিক্ষার্থীর যদি ফ্রি-হ্যান্ড রাইটিং দক্ষতা ভালো থাকে, তবে তিনি ইংরেজিতে ভালো করবেন।"
বাংলাদেশ প্রসঙ্গ: সাধারণ জ্ঞানের বড় অংশজুড়েই রয়েছে বাংলাদেশ বিষয়াবলি। এতে খুব ভালো নম্বর তোলা সম্ভব বলে মনে করেন অতীতে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা। ২৮তম বিসিএসে কর ও ২৯তম বিসিএসে কাস্টমস ক্যাডারের জন্য মনোনীত আবদুল আলিম বলেন, সাধারণ জ্ঞানের প্রথম পত্রে বাংলাদেশ বিষয়াবলির জন্য বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, নৃতাত্ত্বিক পরিচয়, খনিজ সম্পদের বিবরণ, পানি ও বনজ সম্পদ এবং জলবায়ুর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ যে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন হতে পারে। দ্বিতীয় পত্রের জন্য বাংলাদেশের সংবিধান সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে। বাংলাদেশের শাসন ও বিচার বিভাগ এবং আইন বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যক্রম, স্থানীয় সরকার, সামরিক-বেসামরিক বিষয়, নারীর ক্ষমতায়ন, এনজিও এবং বিদেশি দাতাগোষ্ঠী ও সংস্থা প্রভৃতি বিষয়ে প্রশ্ন হতে পারে।
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি: ২৮তম বিসিএসে কর ও ২৯তম বিসিএসে ফরেন অ্যাফেয়ার্সে নিয়োগপ্রাপ্ত নিয়াজ মোরশেদ বলেন, "আন্তর্জাতিক বিষয়ে অনেক বেশি নম্বর পাওয়া সম্ভব। কেননা এখানে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও টীকা মিলিয়ে মোট ৪০ নম্বর রয়েছে। সহজেই এই নম্বর তোলা যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের মুদ্রাব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কার্যক্রম, আন্তর্জাতিক দিবসগুলো, বিভিন্ন পুরস্কার, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, সাগর, আকাশসীমা, জাতীয় শক্তি, ক্ষমতার ভারসাম্য, কূটনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, জাতিসংঘের কার্যক্রম, বিভিন্ন চুক্তি ও সনদ, খেলাধুলা, আন্তর্জাতিক সম্মেলন এবং সাম্প্রতিককালের আলোড়ন সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক ঘটনাবলি ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন আসতে পারে।"
গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা: সাধারণ ও প্রফেশনাল উভয় ক্যাডারের জন্যই গাণিতিক যুক্তি এবং মানসিক দক্ষতার ওপর প্রশ্ন আসে। নিয়াজ মোরশেদ জানান, "পরীক্ষার্থীদের গাণিতিক যুক্তির জন্য দুই ঘণ্টা এবং মানসিক দক্ষতার জন্য এক ঘণ্টা বরাদ্দ থাকার কথা মাথায়রেখেই উত্তর দেওয়া উচিত। পাটিগণিত থেকে গড়, ঐকিক নিয়ম, শতকরা, সুদকষা, লাভ-ক্ষতি ও সমানুপাত—এসব নিয়ে প্রশ্ন আসতে পারে। মানসিক দক্ষতা পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মানসিক দক্ষতা, বুদ্ধিমত্তা, জ্ঞানের গভীরতা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ইত্যাদি যাচাই করা হয়। তাই এ বিষয়টি বেশি করে চর্চা করতে হবে।"
No comments