জননেত্রী শেখ হাসিনার সংক্ষিপ্ত জীবনী...
শেখ হাসিনা ওয়াজেদ (জন্ম: ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭) বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের ১০ম জাতীয় সংসদের সরকারদলীয় প্রধান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান নেতা ও বাংলাদেশ সরকারের প্রথম রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা।
শেখ হাসিনা | |
---|---|
লন্ডনে শেখ হাসিনা (২০১১)
| |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ টুঙ্গিপাড়া, পূর্ব বাংলা, পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
রাজনৈতিক দল | আওয়ামী লীগ (১৯৮১–বর্তমান) |
অন্যান্য রাজনৈতিক দল | মহাজোট (২০০৮–বর্তমান) |
দাম্পত্য সঙ্গী | ওয়াজেদ মিয়া (বি. ১৯৬৮–২০০৯) |
সন্তান | সজীব ওয়াজেদ সায়মা ওয়াজেদ |
মাতা | শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব |
পিতা | শেখ মুজিবুর রহমান |
প্রাক্তন ছাত্র | আজিমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ইডেন মহিলা কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
ধর্ম | ইসলাম |
প্রারম্ভিক জীবন
শেখ হাসিনা ওয়াজেদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। তাঁর মাতার নাম বেগম ফজিলাতুননেসা।[১] তিনি টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহন করে এবং বাল্যশিক্ষা সেখানেই নেন। ১৯৫৪ সাল থেকে তিনি ঢাকায় পরিবারের সাথে মোগলটুলির রজনীবোস লেনের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। পরে মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে উঠেন। ১৯৫৬ সালে তিনি টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে থাকা শুরু করেন।১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি ও তাঁর বোন শেখ রেহানা বাদে পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করা হয়। বোনদ্বয় সেইসময় পড়াশোনার জন্য পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন।
শেখ হাসিনা ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় ১৯৬৭ সালে ড. ওয়াজেদ মিয়ার সাথে তাঁর বিয়ে হয এবং ওয়াজেদ মিয়া ৯ মে, ২০০৯ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন।[২] তাঁদের সংসারে সজীব ওয়াজেদ জয় (পুত্র) ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল (কন্যা) নামে দুই সন্তান রয়েছেন।
রাজনীতি
আওয়ামী লীগ ১৯৮১ সালে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে তাঁর অনুপস্থিতিতেই দলের সভাপতি নির্বাচিত করে। ১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদের ক্ষমতায় আরোহনকে অবৈধ ঘোষণা করলেও তার দল ১৯৮৬ সালে এই সামরিক শাসকের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীকালে তিনি এবং তার দল এরশাদ বিরোধী দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেন ও ১৯৯০ সালে অভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে এরশাদ সরকারকে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন।
১৯৯১ সালে তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের তৎকালীন বৃহত্তম বিরোধীদল হিসেবে প্রকাশ পায়। ১৯৯৬ সালে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা তুলে ধরেন যা বর্তমানে অনেক দেশে ব্যবহার হচ্ছে।তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে তাঁর আন্দোলনে জয়ী হওয়ায় পরবর্তীতে তার দল জাতীয় নির্বাচনেও জয়লাভ করে এবং ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বড় ব্যবধানে হেরে যায়। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে পুণরায় আন্দোলন শুরু করেন কিছু নতুন সমস্যা নিয়ে।
আন্দোলন
১৯৯১ সালের স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সালে তার দল আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে বামপন্থী দলগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচীর মাধ্যমে খালেদা জিয়ার বিএনপি সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে বাধ্য করে। ঐ বছর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন।
বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি (নাজিউর রহমান মঞ্জু) ও ইসলামী ঐক্যজোট এর নির্বাচনী জোটের কাছে ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়। শেখ হাসিনা দলের এই পরাজয়ের জন্য দায়ী করেন তারই মনোনীত তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদ, সাবেক প্রধান বিচারপতি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম এ সাঈদকে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় এক জনসভায় বক্তৃতাদানকালে গ্রেনেড হামলায় এই নেত্রী অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। উক্ত হামলায় তার দেহরক্ষী এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ১৯ জন মৃত্যুবরণ করেন ও শতাধিক আহত হন। বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে এই হামলাকে বিদেশী ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করা হয়।
গ্রেফতার
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো গ্রেফতার হন ২০০৭ সালে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই সকাল ৭:৩১-এ যৌথ বাহিনী শেখ হাসিনাকে তার বাসভবন "সুধা সদন" থেকে গ্রেফতার করে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। সেখানে আদালত তার জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকারের বাসভবনকে সাব-জেল হিসেবে ঘোষণা করে সেখানে অন্তরীণ রাখা হয়। গ্রেফতারের পূর্বে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা জিল্লুর রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে যান। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুইটি অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। একটি হল ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে রাজনৈতিক সংঘর্ষের জন্য হত্যা মামলা এবং অন্যটি হল প্রায় তিন কোটি টাকার চাঁদাবাজি মামলা।[৩] এর মাঝে একটির বাদী ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে মামলাটি তুলে নেন। জেল থেকে মুক্তিলাভের পরে তিনি চিকিৎসার্থে কয়েক মাস বিদেশে অবস্থান করেন। এরপর দেশে ফিরে দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেন।
নির্বাচন ২০০৮
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আসনে জয়লাভ করে। বিজয়ী দলের সংসদীয় দলের নেতা হিসেবে তিনি জানুয়ারি ৬, ২০০৯-এ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তার দল আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে ২৬০টি আসন লাভ করে। অপরদিকে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি পায় মাত্র ৩২টি আসন।[৪]
নির্বাচন ২০১৪
ইতোপূর্বে সপ্তম, অষ্টম এবং নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ড.ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ক্ষমতা ধরে রাখা এবং রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমনের নামে মামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক এ ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষিত হওয়া প্রভৃতি কারণে সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিলের উদ্যোগ নেয়। পরবর্তীতে নবম সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাশের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করা হয় এবং দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। ৫ই জানুয়ারি ২০১৪ সালে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনটি নবম জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অধিকাংশ দলই বর্জন করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্রসহ ১৭টি দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এ নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৪টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ায় নির্বাচনটি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ৫ই জানুয়ারি রোববার বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাকী ১৪৭টি আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। [৫] এর আগে গত ১৮ নভেম্বর, ২০১৩ নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠিত হয়। [৬]
ক্ষমতাধর নারী
বিশ্ব পর্যায়ে
শেখ হাসিনা ২০১১ সালে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী নারী নেতাদের তালিকায় ৭ম স্থানে রয়েছেন। তার পূর্বে এবং পশ্চাতে রয়েছেন যথাক্রমে লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট অ্যালেন জনসন সার্লেফ এবং আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জোহানা সিগার্ডারডটির। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিউ ইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর জরীপে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর নারী নেতৃত্বের ১২জনের নাম নির্বাচিত করে।[৭]
উল্লেখ্য যে, ২০১০ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর অনলাইন জরীপে তিনি বিশ্বের সেরা দশ ক্ষমতাধর নারীদের মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থানে ছিলেন। ঐ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের ঠিক পিছনে ছিলেন এবং ব্যাপক প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তার করেছিলেন।[৮] ২০১৫ সালে বিশ্বের ক্ষমতাধর নারীদের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫৯তম স্থানে আছেন। ২০১৪ সালে এই তালিকায় শেখ হাসিনার অবস্থান ছিল ৪৭তম। [৯]
এশীয় পর্যায়ে
২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবসের শতবর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা সিএনএন ক্ষমতাধর ৮ এশীয় নারীর তালিকা প্রকাশ করেছিল। উক্ত তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থানে ছিলেন শেখ হাসিনা।[১০]
সম্মাননা
৩০ ডিসেম্বর, ২০১১ সালে শেখ হাসিনাকে বাংলা ভাষার ধারক ও বাহক হিসেবে বাংলা একাডেমি তাদের বার্ষিক সাধারণ সভায় সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে।[১১] এছাড়াও, ১২ জানুয়ারি, ২০১২ইং তারিখে দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি এবং উন্নয়নে অনন্য অবদানের জন্য ভারতের ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে ডক্টর অব লিটারেচার বা ডি-লিট ডিগ্রী প্রদান করে।[১২] ২০১৪ সালে সমুদ্রসীমা জয়ের জন্য তিনি সাউথ সাউথ পুরস্কার লাভ করেন ৷ ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ ৭০তম অধিবেশনে পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার চ্যাম্পিয়নস অব দ্যা আর্থ পুরস্কার লাভ করেন ৷ এছাড়া তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার লাভ করেন ৷
জননেত্রী শেখ হাসিনার সংক্ষিপ্ত জীবনী....
১৯৪৭ থেকে ২০১৪ সময়কালের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়- গভীর নিষ্ঠা, সততা ও সাহসিকতায় সব প্রতিকূলতাকে দু’পায়ে মাড়িয়ে চরম সাফল্য অর্জন করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এর আগে তিনি ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০৮ সালের নবম সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন এবং ১৯৮৬ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের ষষ্ঠ এবং ২০০১ সালের অষ্টম সংসদে বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নিম্নে তার সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরা হলো-
- বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫ সন্তানের মধ্যে তিনি সবার বড়। তার মাতার নাম বেগম ফজিলাতুননেসা। তিনি টুঙ্গিপাড়ায় বাল্যশিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৫৪ সাল থেকে তিনি ঢাকায় পরিবারের সাথে মোগলটুলির রজনীবোস লেনের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। পরে মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে উঠেন। ১৯৫৬ সালে তিনি টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৬৭ সালে গভর্নমেন্ট ইন্টারমিডিয়েট গালর্স কলেজ (বর্তমানে বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। ১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে থাকা শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
- স্কুল জীবনেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। ১৯৬২-তে স্কুলের ছাত্রী হয়েও আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন। আজিমপুর গার্লস স্কুল থেকে তার নেতৃত্বে মিছিল গিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজে অধ্যায়নকালে ১৯৬৬-১৯৬৭ শিক্ষাবর্ষে কলেজ ইউনিয়নের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু তার রাজনৈতিক জীবনের পথ চলা। ’৬৯-এর গণআন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন। অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদস্য ও রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাবস্থায় ১৯৬৭ সালে ড. ওয়াাজেদ মিয়ার সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে সজীব ওয়াজেদ জয় (পুত্র) ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল (কন্যা) নামে দুই সন্তান রয়েছে। ওয়াজেদ মিয়া ৯ মে, ২০০৯ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন।
- ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ৭-৮ মাস শেখ হাসিনা, বোন রেহেনা, রাসেল, বেগম মুজিব একই বাড়িতে বন্দী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মা ফজিলাতুননেসা ও মেয়ে শেখ হাসিনার কৌশলী ভূমিকা মুক্তিযুদ্ধকে ব্যাপক সহায়তা করেছিল। ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই শেখ হাসিনা গৃহবন্দি অবস্থায় তার প্রথম সন্তান ‘জয়’-এর মা হন। ১৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে শেখ হাসিনা মুক্ত হন। ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর তার কন্যাসন্তান পুতুলের জন্ম হয়।
- ১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ।
- ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাত্রিতে সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু নিহত হলেও তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে থাকায় বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা। পরবর্তী ৬ বছর লন্ডন ও দিল্লিতে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয় তাদের দু’বোনকে।
- ১৯৮১ সালে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতেই আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ১৯৮১ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি ঢাকার ইডেন হোটেলে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা ঐক্যের প্রতীক হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা দীর্ঘ ৬ বছর পর যখন বাংলার মাটিতে পা দেন, তখন লক্ষ লক্ষ মানুষ তেজগাঁও বিমানবন্দরে সমবেত হয়ে তাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানায়।
- ১৯৮১ সালের ১২ জুন শেখ হাসিনার নিকট বঙ্গবন্ধুর বাড়ি হস্তান্তর করা হয়।
- ১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদের ক্ষমতায় আরোহনকে অবৈধ ঘোষণা করে এরশাদ বিরোধী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন শেখ হাসিনা।
- ১৯৮৩ সালে তিনি পনেরো দলের একটি জোট গঠন করেন। তার নেতৃত্বে দেশ জুড়ে সামরিক শাসক এরশাদ বিরোধী দুর্বার আন্দোলন গড়ে ওঠায় ১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের ৩১জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। চোঁখ বেঁধে তাকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়।
- ১৯৮৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সুপ্রীম কোর্টে আইনজীবী সমাবেশের ভাষণে ’৭৫-এর পর সকল সরকারকে অবৈধ আখ্যাদেন শেখ হাসিনা।
- ১৯৮৪ সালে তিনি আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত আফ্রো-এশীয় গণসংহতি পরিষদের ষষ্ঠ কংগ্রেসে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।
- ১৯৮৫ সালে ইয়াসির আরাফাতের আমন্ত্রণে তিউনেশিয়ায় ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা (PLO)-এর সদর দফতর সফর এবং মধ্যপ্রাচ্য শান্তি-প্রক্রিয়ার বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
- ১৯৮৫ সালে তিনি হজব্রত পালন করেন।
- ১৯৮৬ সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত হন।
- ১৯৮৭ সালের ৩ জানুয়ারি শেখ হাসিনা পুনরায় আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত হন।
- ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর শেখ হাসিনাকে গৃহে অন্তরীণ রাখা হয়।
- ১৯৮৭ সালে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউশন ফর ইন্টারন্যাশনাল এ্যাফেয়ার্স নামে সংগঠনের আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্যান্সিসকোয় অনুষ্ঠিত নারী নেত্রীদের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করেন বিশেষ অতিথি হিসেবে।
- ১৯৮৮ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত আফ্রো-এশীয় গণসংহতি পরিষদের সপ্তম কংগ্রেসে তিনি পাঠ করেন ‘নিরস্ত্রীকরণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ। একই বছর যোগদান করেন বিশ্বশান্তি পরিষদের সভাপতিম-লীর সদস্য হিসেবে প্রাগে অনুষ্ঠিত প্রেসিডিয়াম বৈঠকে।
- ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শুরু হওয়া ৮ দলের মিছিলে জনতার ওপর পুলিশ ও বিডিআর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় ৯ জন নিহত হয়।
- শান্তিপূর্ণভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তরে ১৯৯০ সালে তিনি এক গণআন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।
- ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর আন্দোলনের জোয়ার ঠেকাতে সারা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় এবং শেখ হাসিনাকে ধানমন্ডির বাসায় গৃহবন্দি অবস্থায় রাখা হয়। ৪ ডিসেম্বর জরুরি অবস্থা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত জনসভায় ভাষণ দেন শেখ হাসিনা।
- ১৯৯০ সালে অভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে এরশাদ সরকারকে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। ১৯৮১ থেকে শুরু করে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বিরামহীন সংগ্রাম এবং গতিশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে সামরিক স্বৈরশাসনের নাগপাশ থেকে মুক্তি পায় বাংলাদেশ।
- ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচিত হন।
- ১৯৯১ সালের ৩ মার্চ শেখ হাসিনা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার জন্য সভানেত্রীর দায়িত্ব থেকে দলের সাধারণ সম্পাদিকার নিকট পদত্যাগপত্র পেশ করলে ৪ মার্চ হাজার হাজার আওয়ামী লীগ কর্মী ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুভবনে সমবেত হয়ে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের আবেদন জানায়। ওইদিন এক জরুরি সভায় মিলিত হয়ে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ শেখ হাসিনাকে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের দাবী জানায়। ৫ মার্চ দলীয় কর্মীদের চাপে শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করেন। ৮ মার্চ আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের সভায় সর্বসম্মতভাবে সংসদীয় দলের নেত্রী নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা।
- ১৯৯১ সালের ২১ মার্চ সরকারিভাবে শেখ হাসিনাকে বিরোধীদলের নেত্রী ঘোষণা করা হয়।
- ১৯৯১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সংসদ উপ-নির্বাচনের সময় সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে।
- ১৯৯২ সালের ৭ মার্চ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১০০ জন সংসদ সদস্য শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা গোলাম আযমকে গণআদালতে বিচারের দাবির সঙ্গে একাত্ম ঘোষণা করে।
- ১৯৯২ সালের ১৬ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল করে গোলাম আযমের বিচার করার প্রস্তাব দেন শেখ হাসিনা।
- ১৯৯২ সালের ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সম্মেলনে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
- ১৯৯২ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বশান্তি পরিষদের আন্তর্জাতিক সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি। ওই একই বছর যোগদান করেন নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক পার্টির কনভেনশনে।
- ১৯৯২ সালে তিনি গৌতম বুদ্ধের কর্ম ও চিন্তাধারার ওপর অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সেমিনার উপলক্ষে নেপাল এবং ওই একই বছর পাকিস্তানের করাচিতে অনুষ্ঠিত সার্ক দেশগুলোর পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় নেতৃবৃন্দের সভায় যোগদান করেন।
- ১৯৯৩ সালে চীন সফর করেন শেখ হাসিনা।
- ১৯৯৩ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার সভায় গুলি ও বোমা হামলায় ৫০ জন আহত হয়।
- ১৯৯৩ সালের জুন মাসে ভিয়েনার মানবাধিকারের ওপর দ্বিতীয় বিশ্ব কংগ্রেসের আগ মুহূর্তে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক এনজিও সম্মেলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন।
- ১৯৯৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করেন সম্মানিত অতিথি হিসেবে। একই বছর টোকিওতে অনুষ্ঠিত সোশিয়ালিস্ট ইন্টারন্যাশনালের সেমিনারে যোগদান করেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৪ সালে তিনি ‘ইস্টার্ন ভিশন ফেয়ার’-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
- ১৯৯৪ সালের ১৪ আগস্ট স্বাধীনতার সূতিকাগার জাতির পিতার ধানমন্ডিস্থ ৩২ নম্বর সড়কের ঐতিহাসিক বাসভবনটি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপান্তর করে তা দেশবাসীর উদ্দেশে উৎসর্গ করেন।
- ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার ট্রেন অভিযাত্রায় ঈশ্বরদী ও নাটোরে ব্যাপক সন্ত্রাস, গুলি, বোমা হামলা ও তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশসহ আহত হয় শতাধিক।
- ১৯৯৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা মিন্টো রোডের বিরোধীদলীয় নেতার বাসভবন ত্যাগ করেন।
- ১৯৯৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় সংসদ থেকে আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি বিরোধী দলের সদস্যরা একযোগে পদত্যাগ করেন।
- ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৪৬টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে।
- ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথমবারের মতো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
- ১৯৯৬-২০০১ পাঁচ বছর ছিল স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল সময়। এ সময়কালের মধ্যে ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের সাথে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, ১৯৯৮ সালে যমুনা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা, ১৯৯৯ সালে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করাসহ অনেকগুলো খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়। এসময় দ্রব্যমূল্য ছিল ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে। কৃষকের জন্য ন্যায্যমূল্যে সার, বীজ সরবরাহ এবং সেচ সুবিধা সম্প্রদারণের ফলে দেশ প্রথমবারের মতো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। প্রায় ২ হাজার ৬ শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। প্রথম মুঠোফোন (মোবাইল) প্রযুক্তির বাজার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় এবং উল্লেখযোগ্য হারে কর সুবিধা প্রদান করা হয়। বেসরকারি খাতে টেলিভিশন চ্যানেল অপারেটর করার অনুমতি প্রদান করে আকাশ সংস্কৃতিকে তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যওয়া হয়। পিতার সাথে মাতার নাম লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়। কম্পিউটার আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক হ্রাসকরণের দ্বারা সাধারণের হাতে হাতে বিশ্বয়ানের মাধ্যম পৌঁছে দেওয়া হয়।
- ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর ধানমন্ডি থানায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা দায়ের হয়।
- ১৯৯৬ সালের ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, ‘Bangladesh would work for ensuring world peace and economic and social progress of mankind.’
- ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর সংসদে ইনডেমনিটি বাতিল বিল পাস হয়।
- ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের সাথে ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি সাক্ষরিত হয়। পানি প্রবাহ ৪২ হাজার কিউসেক থেকে ৮২ হাজার কিউসেকে উন্নীত হয়।
- ১৯৯৬ সালে রোমে অনুষ্ঠিত বিশ্বখাদ্য সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেন শেখ হাসিনা।
- ১৯৯৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মান সূচক ‘ডক্টর অব লজ’ উপাধি প্রদান করে।
- ১৯৯৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়ন’ শীর্ষক এক আলোচনাচক্রে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
- ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে প্রথমবারের মতো ‘ক্ষুদ্র ঋণ সংক্রান্ত বিশ্ব মহাসম্মেলন’-এ কো-চেয়ারপার্সন হিসেবে অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
- ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লিতে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেন তিনি।
- ১৯৯৭ সালের ৬ ও ৭ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা।
- ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকার, মায়ানমার ও থাইল্যান্ডকে নিয়ে গঠিত উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা ফোরাম ‘বিমসটেক’-এ অংশগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা।
- ১৯৯৭ সালের ৪ জুলাই জাপানের বিখ্যাত ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয় এক বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি প্রদান করে।
- ১৯৯৭ সালের ১৫ জুলাই জার্মানির হামবুর্গে ইউনেস্কোর উদ্যোগে আয়োজিত পঞ্চম আন্তর্জাতিক বয়স্ক শিক্ষা সম্মেলনে যোগদান এবং সম্মেলনের মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন শেখ হাসিনা।
- ১৯৯৭ সালের ২৫ অক্টোবর গ্রেট বৃটেনের ডান্ডি অ্যাবার্তে বিশ্ববিদ্যালয় এক বিশেষ সমার্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ডক্টর অব লিবারেল আর্টস’ ডিগ্রি প্রদান করে।
- ১৯৯৭ সালে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি শান্তি, গণতন্ত্র ও উপমহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য স্থাপনে অনন্য ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ শেখ হাসিনাকে ‘নেতাজী মেমোরিয়াল পদক ১৯৯৭’ প্রদান করে।
- ১৯৯৭ সালে রোটারি ইন্টারন্যাশনালের রোটারি ফাউন্ডেশন শেখ হাসিনাকে ‘পল হ্যারিস ফেলো’ নির্বাচিত করে এবং ১৯৯৬-৯৭ সালের সম্মাননা মেডেল প্রদান করে।
- একই বছর লায়ন্স ক্লাবসমূহের আন্তর্জাতিক এ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক ‘রাষ্ট্রপ্রধান পদক’-এ ভূষিত হন শেখ হাসিনা।
- ১৯৯৭ সালের ২৮ অক্টোবর লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স-এ ‘ভোট কারচুপি ও সমাধান’ প্রসঙ্গে ভাষণ দেন শেখ হাসিনা। তার এই ভাষণ রাষ্ট্র ও সমাজ বিজ্ঞানীদের কাছে বিপুল প্রশংসা অর্জন করে।
- ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরে তেহরানে অনুষ্ঠিত ইসলামি ঐক্য সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেন শেখ হাসিনা। এছাড়াও ওই একই বছরে যুক্তরাজ্যের এডিনবরায় কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলন, মাল্লদ্বীপে অনুষ্ঠিত সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেন তিনি।
- ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার ১৪ হাজারেরও বেশি মহিলা জনগণের সরাসরি ভোটে সদস্য ও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়।
- ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
- ১৯৯৮ সালের ২৮ জানুয়ারি শান্তি নিকেতনে বিশ্বভারতীর এক আড়ম্বরপূর্ণ বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সম্মানসূচক ‘দেশিকোত্তম’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
- ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ির স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ‘শান্তিবাহিনী’ প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র সমর্পণ করেন। সেই সাথে ওই বাহিনীর প্রায় দুই সহ¯্র সশস্ত্র সদস্যও গোপন অবস্থান থেকে বেরিয়ে এসে অস্ত্র সমর্পণ করে ফিরে যান স্বাভাবিক জীবনে। ১৯৯৮ সালের জুন মাসের ভেতর কয়েক দফায় সম্পন্ন হয় এ অস্ত্র সমর্পণের পালা। একই সময়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণকারী প্রায় ৬৫ হাজার চাকমা শরণার্থী মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন।
- পাবর্ত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদান রাখার জন্য জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন ইউনেস্কো শেখ হাসিনাকে ১৯৯৮ সালের ফেলিক্স হুফে বইনি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করেন।
- ১৯৯৮ সালের ১২ এপ্রিল শান্তি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য শেখ হাসিনাকে ‘মাদার তেরেসা পদক’ প্রদান করে নিখিল ভারত শান্তি পরিষদ।
- নরওয়ের রাজধানী অসলোয় অবস্থিত মহাত্মা গান্ধী ফাউন্ডেশন শেখ হাসিনাকে ১৯৯৮ সালের ‘এম. কে. গান্ধী’ পদক প্রদান করে।
- ১৯৯৮ সালের মে মাসে মাত্র দু’সপ্তাহের ব্যবধানে ভারত ও পাকিস্তান উপর্যুপরি বেশ কয়েকটি পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দক্ষিণ এশিয়া; তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এ উপ-মহাদেশ জুড়ে। সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমন ও পারমাণবিক অস্ত্র-প্রতিযোগিতা থেকে তাদের বিরত রাখার উদ্দেশ্যে ১৯৯৮ সালের জুন মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত ও পাকিস্তানে ঝটিকা সফর করে উভয় দেশকে অস্ত্র প্রতিযোগিতা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান। শান্তির দূত শেখ হাসিনার এ সাহসী উদ্যোগকে বিশ্ব-সম্প্রদায় স্বাগত জানান এবং ভূয়সী প্রশংসা করেন।
- ১৯৯৮ সালের প্রলয়ঙ্কারী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৪২ লাখ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে ২ কোটি ১০ লাখ মানুষকে প্রায় ৯ মাস বিনামূল্যে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কৃষিঋণ আদায় একবছর বন্ধ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
- ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত উদ্যোগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বাণিজ্যিক শীর্ষ সম্মেলন।
- ১৯৯৯ সালের ১৫ মে ‘হেগ শান্তি সম্মেলনের শত বার্ষিকী’ অনুষ্ঠানের সমাপনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন শেখ হাসিনা।
- ১৯৯৯ সালে ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলনের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (FAO) কর্তৃক ‘সেরেস পদক’ লাভ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
- ১৯৯৯ সালের ২০ অক্টোবর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অসাধারণ অবদানের জন্য ক্যানবেরায় অস্ট্রেলিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃক শেখ হাসিনাকে ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
- ১৯৯৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ উপাধি প্রদান করা হয়।
- শেখ হাসিনার নিরলস প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সালের নভেম্বরে ইউনেস্কোর ৩০তম সাধারণ সম্মেলনে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে বাঙালি জাতির গর্ব ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করে।
- ২০০০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ব্রাসেলসের ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয় শেখ হাসিনাকে (Doctor Honoris Causa) প্রদান করে।
- ২০০০ সালে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার জন্য ম্যাকন ওমেনস কলেজ যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ‘পার্ল এস বাক পদক’ লাভ করেন তিনি।
- ২০০০ সালে আফ্রো-এসিয়ান ল ইয়ার্স ফেডারেশন প্রদত্ত ‘পার্সন অফ দ্যা ইয়ার’ নির্বাচিত হন তিনি।
- ২০০০ সালে মুফতি হান্নান গং তাকে হত্যার চেষ্টা করে কোটালিপাড়ায়।
- ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অভিষেক টেস্ট ম্যাচের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। ওইদিনই ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের প্রথম এশীয় সম্মেলন উদ্বোধন করেন তিনি।
- ২০০১ সালে বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ডক্টর অব সায়েন্স’ ডিগ্রি প্রদান করে।
- ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত হন।
- ২০০২ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনী কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
- ২০০৩ সালের ২৮ জানুয়ারি হোটেল পূর্বাণীতে তৃতীয় সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জনকারী বিজয়ী বাংলাদেশ ফুটবল দলের সম্মানে সংবর্ধনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা।
- ২০০৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সিলভার জুবলি সমাপনী অনুষ্ঠানে ‘সিভিল সোসাইটি এন্ড গুড গভরন্যান্স : দি জার্নালিস্ট রুল’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন দেশর শেখ হাসিনা।
- ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে তাকে এবং তার অনুগামীদের হত্যার উদ্দেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনায় সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবাণীতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও নারী নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। কানের পর্দা ফেটে গিয়ে আহত হন শেখ হাসিনা।
- ২০০৪ সালের ২৫ অক্টোবর নিউইয়র্কের লার্গোডিয়া কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সার্বজনীন গণসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন শেখ হাসিনা।
- ২০০৪ সালের ২৮ অক্টোবর নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে দি কাউন্সিল অব ওম্যান ওয়ার্ল্ড লিডার্স আয়োজিত ‘শেপিং দ্য ফিউচার গ্লোবাল পলিসি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন শেখ হাসিনা।
- ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিরোধীদলের আন্দোলনের মুখে বিএনপি-জামাতের নীলনকশার নির্বাচন বাতিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বঘোষিত প্রধানের পদ থেকে ইয়াজউদ্দিনের পদত্যাগ। জরুরি অবস্থা ঘোষণা। ড. ফখরুদ্দিনের নেতৃত্বে নতুন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্বভার গ্রহণ করে। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে অপসারণের উদ্দেশ্যে মাইনাস টু ফর্মুলা প্রদান।
- ২০০৫ সালের ৪ এপ্রিল ম্যানিলায় এসোসিয়েশন অব এশিয়ান পার্লামেন্টস ফর পিস আয়োজিত সিনিয়র অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল-এর সভায় যোগ দেন।
- ২০০৫ সালের জুন মাসে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শান্তির সপক্ষে অবদান রাখার জন্য শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে পিপল্স ফ্রেন্ডসশীপ ইউনির্ভাসিটি অব রাশিয়া।
- ২০০৬ সালের ৬ জানুয়ারি ওমরা হজ পালন করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।
- ২০০৭ সালের ৭ মার্চ রাতে যৌথবাহিনীর একটি দল কোন ধরনের সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়াই দুই দফায় জননেত্রী শেখ হাসিনার সুধা সদনস্থ বাসভবনে প্রবেশ করে।
- ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ২০০৮ সালের ১১ জুন প্যারোলো মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি কারান্তরীণ থাকেন। চিকিৎসা শেষে ৪ ডিসেম্বর স্বদেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
- ২০০৮ সালের ৭ জুন থেকে ৩০ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিঃশর্ত মুক্তিসহ ৬-দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশব্যাপী গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা ও ১৫ জুন থেকে ৩০ জুন জেলায় জেলায় বর্ধিত সভা অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
- ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর শেরাটনের উইন্টার গার্ডেনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার উপস্থাপন করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।
- ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৬৪টি আসন লাভ করে।
- ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার কর্মযজ্ঞ শুরু : -বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিস্পত্তি। ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যুদ- কার্যকর। জাতি কলঙ্কমুক্ত। -বিডিআর বিদ্রোহের শান্তিপূর্ণ সমাধান। সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ব্যর্থ। -মহাজোট সরকারের প্রথম ও দ্বিতীয় বাজেট বাস্তবায়ন। বিশ্বমন্দা মোকাবেলা। দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা। -কৃষিতে বিপুল ভর্তুকি, ধানের বাম্পার ফলন। সর্বকালের সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। সর্বোচ্চ রফতানি আয় বৃদ্ধি, প্রবৃদ্ধির হার ৬.৭ শতাংশে উন্নীত। -নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন। প্রতি বছর বিনামূল্যে বই প্রদান। প্রাথমিক ও নিম্নমাধ্যমিক স্তরে সফল পাবলিক পরীক্ষার পদ্ধতি প্রচলন। -বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সঙ্কট সমাধানে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি; লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা। শিল্প-কারখানায় নতুন করে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ প্রদান শুরু। -কর্মসংস্থান ও হতদরিদ্রদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি সম্প্রসারণ। -খোলাবাজারে ৪২ টাকা কেজির চাল জনপ্রতি ৫ কেজি ২৪ টাকা দরে বিতরণ। -যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু। -সফলভাবে ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনুষ্ঠান। ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্যের সূচনা। পরপর দুই বছরে বাংলাদেশের দুই তরুণের এভারেস্ট জয়। -উন্নয়নশীল বিশ্বে বাংলাদেশেই প্রথম সোনালি আঁশ পাটের জিন প্রযুক্তির আবিষ্কার। সম্ভাবনার স্বর্ণদুয়ার উন্মোচিত। -বন্ধ পাটকল চালু। শিল্পায়নের নতুন উদ্যোগ গ্রহণ। -গার্মেন্ট শ্রমিকদের পে-স্কেল পুনর্নির্ধারণ। সরকারি কমকর্তা-কর্মচারীদের নতুন বর্ধিত বেতন স্কেল কার্যকর করা। শিল্প পুলিশ বাহিনী গঠন। শিল্পে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। -পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু। ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে একাধিক উড়াল সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও ক্রাইভার নির্মাণ দ্রুতগতিতে অগ্রসরমান। -বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূমিকা পালন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি।
- ২০০৯ সালের ২৪ জুলাই আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
- ২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি বিশ্বখ্যাত ‘ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পদক-২০০৯’-এ ভূষিত হন শেখ হাসিনা।
- ২০০৯ সালে ন্যামের ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়।
- ২০১০ সালে মার্কিন আর্থিক প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান অ্যান্ড স্যাশ বাংলাদেশকে ‘সম্মুখের সারির বাজার’ এবং ‘একাদশ উদীয়মান’ দেশ হিসাবে চিহ্নিত করে।
- ২০১০ সালের ২৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নে অসমান্য অবদানের জন্য St. Petersburg বিশ্ববিদ্যালয় Honorary Doctorate প্রদান করেন।
- শিশু মৃত্যুর হ্রাস সংক্রান্ত এমডিজি-৪ অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ কর্তৃক এমডিজি অ্যাওয়ার্ড-২০১০ পুরস্কার লাভ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
- ২০১১ সালে প্যারিসের ডাউফিন ইউনিভার্সিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মর্যাদাপূর্ণ স্বর্ণপদক ও ডিপ্লোমা পুরস্কার প্রদান করে।
- আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (ITU), সাউথ-সাউথ নিউজ ও জাতিসংঘের আফ্রিকা সংক্রান্ত অর্থনৈতিক কমিশন কর্তৃক যৌথভাবে প্রদত্ত South-South Awards 2011: Digital Development for Digital Health শীর্ষক পদক লাভ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
- ২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের হাউস অব কমন্সের স্পিকার John Bercow, MP প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দূরদর্শী নেতৃত্ব, সুশাসন, মানবাধিকার রক্ষা, আঞ্চলিক শান্তি ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে তার অনবদ্য অবদানের জন্য ‘Global Diversity Award’ প্রদান করেন।
- ২০১১ সালের ৩০ ডিসেম্বর বাংলা একাডেমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে।
- ২০১২ সালের ১২ জানুয়ানি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ‘ডি-লিট’ ডিগ্রি প্রদান করে ত্রিপুরা সেন্ট্রাল ইউনির্ভাসিটি। শেখ হাসিনার রাষ্ট্র পরিচালনা, নেতৃত্বের দূরদৃষ্টি এবং শান্তি ও গণতন্ত্রের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারের স্বীকৃতি স্বরূপ এই ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
- ২০১২ সালের ১৪ মার্চ মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত মামলায় আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল ইটলসের রায়ে বঙ্গোপসাগরে এক লাখ ১১ হাজার ৬৩১ বর্গকিলোমিটারের বেশি সমুদ্র এলাকায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
- ২০১২ সালের ২৮ এপ্রিল সমুদ্রজয় উদযাপন নাগরিক কমিটি কর্তৃক বর্ণাঢ্য সংবর্ধনায় বরিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
- ২০১২ সালের ১৯ জুন ছোট বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থ ও এর ইংরেজি সংস্করণ ‘The Unfinished Memoires’-এর মোড়ক উন্মোচন করেন শেখ হাসিনা। ৯ জুলাই গ্রন্থটির প্রকাশনা উৎসবে তিনি বলেন, ‘জাতির সম্পদ জাতির হাতে তুলে দিলাম।’
- ২০১২ সালের ১০ আগস্ট দেশের প্রথম ডিজিটাল কোরআন শরীফ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
- ২০১২ সালে বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষা এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এগিয়ে নিতে বিশেষ অবদানের জন্য UNESCO কর্তৃক ‘কালচারাল ডাইভারসিটি পদক’ লাভ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
- ২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর টেলিটকের থিজ্রি প্রযুক্তি উদ্বোধন করেন তিনি।
- ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর সাধারণ অধিবেশনের সভায় ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থনে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ এবং ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাব পাস হয়।
- ২০১৩ সালের ১৬ জুন জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) দারিদ্রতা, অপুষ্টি দূর করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করায় বাংলাদেশকে ‘ডিপ্লোমা এ্যাওয়ার্ড’ পদকে ভূষিত করে।
- ২০১৩ সালের ৪ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনসাধারণের জন্য খুলে দেন স্বপ্নের কুড়িল ফ্লাইওভার।
- ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশি পাটের জীবনরহস্য উন্মোচনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক সহায়তায় বিজ্ঞানী মাকছুদুল আলমের নেতৃত্বে একদল গবেষকের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জিত হয় যুগান্তকারী এ সফলতা।
- ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দেশে খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর সাউথ সাউথ কো-অপারেশনের ‘সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড-২০১৩’ পুরস্কার লাভ করেন প্রধানমন্ত্রী।
- ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর পাবনার ঈশ্বরদীতে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
- ২০১৩ সালের ১১ অক্টোবর রাজধানীতে নির্মিত দেশের বৃহত্তম ফ্লাইওভার ‘মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়াল সেতু’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
- ২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার স্বপ্ন-প্রসূত ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’ ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত তথ্য-প্রযুক্তি মেলায় সাউথ এশিয়া ও এশিয়া প্যাসিফিক Manthan Award, 2013 পদকে ভূষিত হয়।
- ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।
- ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
- ২৩ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়ি আর ঝাউবীথির বুক চিরে গড়ে তোলা শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইস্টেডিয়াম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
- ১৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে টোয়েন্টি২০ বিশ্বকাপের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
- ২৬ মার্চ বাংলাদেশ গড়ে লাখো কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার বিশ্ব রেকর্ড।
- ২৩ এপ্রিলে আগামী তিন বছরের (২০১৫-২০১৭) জন্য জাতিসংঘের ইউনিসেফ এক্সিকিউটিভ বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ
No comments