Breaking News

করোনাভাইরাস রোগ (কোভিড-১৯): অভিভাবকদের জানা উচিত

‘নভেল’ করোনাভাইরাস কি?

নভেল করোনাভাইরাস (সিওভি) হলো করোনাভাইরাসের এক নতুন প্রজাতি।

নভেল করোনাভাইরাসের মাধ্যমে সৃষ্ট এই রোগটি প্রথম চীনের উহানে চিহ্নিত হয়েছিল। তখন থেকেই রোগটির নাম করা হয়েছিল করোনাভাইরাস রোগ ২০১৯ (কোভিড-১৯)। করোনা থেকে ‘কো’ , ভাইরাস থেকে ‘ভি’, এবং ‘ডিজিজ’ বা ‘রোগ’ থেকে ‘ডি’ নিয়ে এর সংক্ষিপ্ত নামকরণ করা হয়। আগে, এই রোগকে ‘২০১৯ নভেল করোনাভাইরাস’ বা ‘২০১৯-এনসিওভি’ বলা হতো।



কোভিড-১৯ হলো একটি নতুন ভাইরাস যা অতীতের সার্স ভাইরাস এবং কয়েক ধরনের সাধারণ সর্দি-জ্বর জাতীয় ভাইরাসের পরিবারভুক্ত

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড ১৯-কে মহামারী হিসাবে উল্লেখ করেছে। এর অর্থ কি?

কোভিড-১৯-কে মহামারী হিসাবে চিহ্নিত করার অর্থ এই নয় যে এই ভাইরাসের ভয়াবহতা বেড়েছে। মূলত এর ভৌগলিক বিস্তারের স্বীকৃতিস্বরূপ একে মহামারী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

যেহেতু কোভিড-১৯ ভাইরাসটি যে কোন দেশে এবং যে কোন সম্প্রদায়ের শিশু ও পরিবারের মধ্যে বিস্তার লাভ করতে পারে, সেহেতু ইউনিসেফ এর প্রশমনে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহন করছে। পরিবার ও শিশুদের এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখতে ইউনিসেফ বিভিন্ন দেশের সরকার ও সহযোগী সংস্থাগুলোর সাথে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে।

ভাইরাসটি সম্পর্কে অনলাইনে প্রচুর তথ্য। এক্ষেত্রে আমার কি করনীয়?

কোভিড-১৯সহ করোনাভাইরাস কিভাবে ছড়ায়, এর থেকে নিজেকে কিভাবে সুরক্ষিত রাখতে হয় এবং এই ভাইরাস হয়েছে ধারণা করলে কি কি করনীয় ইত্যাদি বিষয়ে অনলাইনে প্রচুর ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি।

কোভিড-১৯ ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়?

সংক্রমিত ব্যক্তির শ্বাসতন্ত্রের ফোঁটার (কাশি এবং হাঁচির মাধ্যমে তৈরী) সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে এবং 

এই ভাইরাস দ্বারা দূষিত অংশ স্পর্শ করার মাধ্যমে এটি সংক্রমিত হয়। কোভিড-১৯ ভাইরাস বেশ কয়েক ঘন্টা 

ভূপৃষ্ঠে বেঁচে থাকতে পারে, তবে সাধারণ জীবাণুনাশক এটিকে মেরে ফেলতে সক্ষম।

করোনাভাইরাসের লক্ষণগুলো কী?

করোনভাইরাসের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট। আরও মারাত্মক ক্ষেত্রে, এই সংক্রমণের ফলে

 নিউমোনিয়া বা শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধা হতে পারে। তবে, খুব কম ক্ষেত্রেই এই রোগ প্রাণঘাতী হয়।

এসব লক্ষণগুলো ফ্লু (ইনফ্লুয়েঞ্জা) বা সাধারণ ঠান্ডা-জ্বর, যা কোভিড-১৯ এর চেয়ে অনেক বেশি সাধারণ। 

এ কারণেই কোনও ব্যক্তি কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখে নেয়া দরকার। 

এটি মনে রাখা প্রয়োজন যে, মূল প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো একই রকম। এর মধ্যে রয়েছে বার বার হাত ধোয়া 

এবং শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। যেমন, কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় কনুই দিয়ে ঢেকে নেয়া বা টিস্যু

 ব্যবহার করা, তারপর টিস্যুটি নিকটবর্তী বন্ধ ময়লার বাক্সে ফেলে দেয়া। এছাড়াও, জ্বরের জন্য একটি টিকা রয়েছে।

 তাই, নিজেকে এবং নিজের সন্তানকে সময়মতো ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা মনে রাখবেন।

সংক্রমণের ঝুঁকি আমি কীভাবে এড়াতে পারি?

সংক্রমণ এড়াতে আপনি এবং আপনার পরিবার নিচের চার ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন:

হাত ধোয়া

ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে বা অ্যালকোহলযু্ক্ত হাত-ধোয়ার সামগ্রী ব্যবহার করে আপনার হাত ধূয়ে নিন

মুখ ঢেকে হাঁচি দেয়া

কাশি বা হাঁচি দেবার সময় মুখ এবং নাক কনুই দিয়ে বা টিস্যু দিয়ে ঢেকে রাখুন। ব্যবহূত টিস্যুটি তাৎক্ষণিকভাবে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দিন

ঠান্ডা লেগেছে বা জ্বরের লক্ষণ আছে এমন ব্যক্তি

ঠান্ডা লেগেছে বা জ্বরের লক্ষণ আছে এমন ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন

আপনার বা আপনার সন্তানের জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিন।

আপনার বা আপনার সন্তানের জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিন

সঠিকভাবে হাত ধোয়ার অন্যতম উপায় কী?

ধাপ ১: প্রবাহমান পানিতে হাত ভেজানো;

ধাপ ২: ভেজা হাতে পর্যাপ্ত পরিমান সাবান ব্যবহার করা;

ধাপ ৩: হাতের পেছনের অংশ, আঙ্গুলের মধ্যের অংশ এবং নখের নিচের অংশসহ হাতের সব অংশই অন্ততপক্ষে 

২০ সেকেন্ড ভালোভাবে ধুয়ে ফেলা;

ধাপ ৪: প্রবাহমান পানিতে ভালভাবে কচলে হাত ধোয়া;

ধাপ ৫: একটি পরিষ্কার কাপড় বা এককভাবে ব্যবহার করেন এমন তোয়ালে দিয়ে হাত ভালোভাবে মুছে ফেলা।

আপনার হাত ঘন ঘন ধুবেন। বিশেষ করে, খাবার আগে, নাক পরিস্কার করার পর, কাশি বা হাঁচি দেওয়ার পর 

এবং বাথরুমে যাওয়ার পরেও।

সাবান ও পানি যদি সহজে পাওয়া না যায়, সেক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ অ্যালকোহল রয়েছে এমন 

অ্যালকোহলভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। যদি হাতে ময়লা থাকে, তবে সব সময় সাবান ও পানি দিয়ে

 হাত ধুয়ে ফেলুন।

v

আমার কি মেডিক্যাল মাস্ক পরা উচিত?

যদি আপনার শ্বাসকষ্টের লক্ষণ (কাশি বা হাঁচি) থাকে, তবে অন্যের সুরক্ষার জন্য একটি মেডিকেল মাস্ক ব্যবহার 

করার পরামর্শ দেওয়া হয়। যদি আপনার কোন লক্ষণ না থাকে, তবে মাস্ক পরার কোন প্রয়োজন নেই।

যদি মাস্ক পরা হয় তবে ভাইরাস সংক্রমণের বাড়তি ঝুঁকি এড়াতে অবশ্যই এর যথাযথ ব্যবহার করতে হবে এবং 

ব্যবহারের পর এগুলো যথাযথভাবে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দিতে হবে।

তবে শুধুমাত্র মাস্কের ব্যবহার এই ভাইরাসের সংক্রমন রোধ করার জন্য যথেষ্ট নয়। এর সাথে অবশ্যই ঘন ঘন হাত 

ধোয়া, হাঁচি ও কাশি ঢেকে রাখা, এবং ঠান্ডা লাগা বা ফ্লু-এর মতো লক্ষণ রয়েছে (কাশি, হাঁচি, জ্বর) এমন ব্যক্তির 

সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত।

কোভিড-১৯ কি শিশুদের প্রভাবিত করে?

এটি একটি নতুন ধরনের ভাইরাস এবং ভাইরাসটি শিশু বা গর্ভবতী মায়েদের কীভাবে প্রভাবিত করে সে সম্পর্কে 

আমরা খুব বেশি কিছু জানি না। আমরা শুধু এটুকু জানি যে, যে কোন বয়সের মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। 

তবে এখনও পর্যন্ত শিশুদের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমনের ঘটনা তুলনামূলকভাবে খুব কম ঘটেছে। এখন পর্যন্ত 

বয়স্ক ব্যক্তি এবং আগে থেকে অসুস্থ ব্যক্তি ছাড়া খুব কম ক্ষেত্রেই এই ভাইরাস মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।

যদি আমার সন্তানের কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দেখা দেয় সেক্ষেত্রে কি করা উচিত?

যদি আপনার শিশুর কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দেখা দেয় তখন আপনি অবশ্যই চিকিৎসা সেবা নিবেন। তবে মনে 

রাখতে হবে যে, উত্তর গোলার্ধ্বে এখন জ্বরের মৌসুম, এবং কোভিড-১৯ এর লক্ষণ যেমন, কাশি বা জ্বর, ফ্লু’র 

মত একই রকমের হতে পারে বা সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের বিষয়টিও খুবই স্বাভাবিক।

ভালভাবে হাত ধোয়া এবং শ্বাসতন্ত্রজনিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা দরকার। যেসব ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া রোগ সৃষ্টি 

করে, দৈনন্দিন হাত ধোয়া এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সন্তানকে ভ্যাকসিন দেওয়ার মাধ্যমে সেগুলো থেকে তাদেরকে রক্ষা

 করতে পারবেন।

আপনার বা আপনার সন্তানের যদি ফ্লু’র মতো শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত অন্যান্য সংক্রমন থাকে, তবে দ্রুত স্বাস্থ্য সেবা নিন। 

এছাড়াও, অন্যদের মধ্যে এই সংক্রমন ছড়িয়ে পড়া রোধ করার জন্য জনসমাগমস্থলে (কম©ক্ষেত্র, বিদ্যালয়, 

গণপরিবহন) যাওয়া যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।

পরিবারের কোনও সদস্যের এই লক্ষণ দেখা দিলে কী করা উচিত?

আপনার বা আপনার সন্তানের যদি জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট থাকে তবে অবশ্যই চিকিৎসা সেবা নিতে হবে। কোভিড-১৯

 সংক্রমিত হয়েছে এমন কোনও এলাকা যদি আপনি ভ্রমণ করে থাকেন, বা কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়েছে এমন 

কোনও এলাকা ভ্রমণ করেছে ও শ্বাসতন্ত্রের জটিলতার লক্ষণ রয়েছে এমন কারও সাথে যদি আপনার ঘনিষ্ঠ

 যোগাযোগ হয়, তবে আগে থেকেই স্বাস্থ্য সেবাদানকারীর সাথে কথা বলুন।

আমার সন্তানকে কি বিদ্যালয়ে পাঠানো বন্ধ করা উচিত?

যদি আপনার সন্তানের উপরোক্ত লক্ষণগুলো থাকে, তবে চিকিৎসা সেবা নিন এবং স্বাস্থ্য সেবাদানকারীর নির্দেশনা

 অনুসরণ করুন। অন্যথায়, ফ্লু’র মতো শ্বাসতন্ত্রের অন্যান্য লক্ষণগুলো থাকা অবস্থায় আপনার শিশুকে বাড়িতে রাখুন 

এবং অন্যদের মধ্যে ভাইরাসটি ছড়ানো রোধ করতে অবশ্যই তাকে লোকালয়ে যেতে দিবেন না।

যদি আপনার সন্তানের জ্বর বা কাশির মতো কোন লক্ষণ দেখা না দেয় – এবং যদি জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কোনও পরামর্শ

 বা অন্যান্য প্রাসঙ্গিক সতর্কতা বা সরকারিভাবে পরামর্শ দেওয়া না হয় - যা আপনার সন্তানের বিদ্যালয়ে 

যাওয়াকে প্রভাবিত করে, সেক্ষেত্রে আপনার সন্তানকে বিদ্যালয়ে যেতে দিন।

আপনার সন্তানকে বিদ্যালয়ে যেতে না দেওয়ার চেয়ে তাদেরকে বরং ভালোভাবে হাত ধোয়া, ও শ্বাসতন্ত্রের স্বাস্থ্যবিধি 

মেনে চলা যেমন, ঘন ঘন হাত ধোঁয়া (নিচে দেখুন), কাশি ও হাঁচি দেবার সময় কনুই দিয়ে ঢেকে বা টিস্যু ব্যবহার

 করা ও তারপর, টিস্যুকে যথাস্থানে ফেলে দেওয়া, এবং সঠিকভাবে হাত না ধোয়া পর্যন্ত চোখে, মুখে বা নাকে হাত 

না দেওয়া সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া উচিত।

ভ্রমণের ক্ষেত্রে পরিবারের জন্য আমার কি ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

বিদেশে ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন এমন যে কোনও ব্যক্তির উচিত গন্তব্যস্থানে প্রবেশের ক্ষেত্রে সে দেশে 

ভ্রমণের জন্য কোনও বিধিনিষেধ আছে কিনা, প্রবেশের সময় আলাদা থাকার প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা বা অন্যান্য 

প্রাসঙ্গিক ভ্রমণ পরামর্শ যাচাই করা।

মানসম্পন্ন ভ্রমণ সতর্কতা যাচাই করা ছাড়াও নিজেকে আলাদা রাখা বা নিজের দেশে ফেরত পাঠানো এড়াতে 

সর্বশেষ কোভিড-১৯ আপডেট জানতে আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থার ওয়েবসাইটটি দেখে নেয়া উচিত।

 এই ওয়েবসাইটে কোভিড-১৯ আক্রান্ত দেশগুলির একটি তালিকা এবং বিধিনিষেধ সম্পর্কে বলা আছে।

ভ্রমণের সময়, সকল পিতামাতার নিজের এবং তাদের সন্তানদের জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা উচিত: ঘন

 ঘন হাত ধোয়া, বা কমপক্ষে ৬০ শতাংশ অ্যালকোহল রয়েছে এমন স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, শ্বাসতন্ত্রের জন্য 

প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা (কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় কনুই দিয়ে ঢাকা বা টিস্যু ব্যবহার করা ও তারপর 

ব্যবহূত টিস্যুকে বিনে ফেলে দেওয়া) এবং কাশি বা হাঁচি দিচ্ছে এমন কারো সংস্পর্শে না যাওয়া। এছাড়াও, সকল 

পিতামাতার উচিত সব সময় একটি হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ডিসপোজেবল টিস্যু পেপারের প্যাকেট এবং জীবাণুনাশক 

ন্যাকড়া বহন করা।

আরও যেসব পরামশ© রয়েছে সেগুলো হলো: বিমান বা অন্যান্য যানবাহনের অভ্যন্তরের বসার জায়গা, সিটের হাতল,

 টাচস্ক্রিন ইত্যাদি জীবানুনাশক কাপড় দিয়ে পরিস্কার করা। এছাড়াও, আপনি ও আপনার সন্তান অবস্থান করছেন 

এমন হোটেল বা অন্য বাসস্থানের মূল অংশগুলো, দরজার হাতল, রিমোর্ট কন্ট্রোল ইত্যাদি পরিস্কার করার জন্য 

জীবানুনাশক কাপড় ব্যবহার করা।

গর্ভবতী নারীদের মাধ্যমে কি তাদের অনাগত সন্তানের মধ্যে করোনা ভাইরাস 

সংক্রমিত হতে পারে?

এখন পর্যন্ত এমন কোন প্রমান হাতে নেই যাতে বলা যেতে পারে যে, গর্ভাবস্থায় এই ভাইরাস মায়ের থেকে তার সন্তানের

 মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে। এছাড়াও, শিশুর উপর এই ভাইরাসের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে মন্তব্য করার মতোও

 কোন প্রমাণ নেই। বর্তমানে এবিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। এই ভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে গর্ভবতী নারীদের 

রক্ষা পেতে হলে জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট জাতীয় লক্ষণ দেখা দেয়ার সাথে সাথে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করা এবং 

আগেভাগেই চিকিৎসা সেবা নেওয়া উচিত।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মায়েদের কি তাদের সন্তানদের বুকের দুধ খাওয়ানো নিরাপদ?

আক্রান্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের সকল মা যাদের জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্টের লক্ষণ রয়েছে, তাদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা 

নেওয়া উচিত এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের পরামর্শ অনুসরণ করা উচিত।

বুকের দুধ খাওয়ানোর সুবিধা এবং বিভিন্ন ধরনের শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাস সংক্রমণে বুকের দুধের গৌণ ভূমিকা বিবেচনা 

করে বলা যেতে পারে যে, প্রয়োজনীয় সকল সতর্কতা অবলম্বন করে মায়েরা তাদের সন্তানদের বুকের দুধ 

v

খাওয়ানো চালিয়ে যেতে পারেন।

করোনাভা্ইরাস সংক্রমনের লক্ষণ রয়েছে এমন মায়েরাও বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন। তবে তারা যখন সন্তানের কাছে 

থাকবেন এবং দুধ খাওয়াবেন তখন মাস্ক পরবেন, সন্তানের সংস্পর্শে আসার আগে ও পরে (দুধ খাওয়ানোর সময়) 

ভালো করে হাত ধুয়ে নিবেন, এবং জীবানু রয়েছে এমন জায়গা ভালভাবে পরিস্কার করবেন। কোভিড-১৯ এ নিশ্চিতভাবে

 আক্রান্ত বা এই ভাইরাসে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে এমন যে কোন মানুষ শিশুসহ অন্যদের সংস্পর্শে আসার 

সময় সকল ক্ষেত্রে উপরোক্ত সতর্কতাগুলো অবলম্বন করবেন।

মা যদি খুবই অসুস্থ হয়, তখনও বুকের দুধ সংরক্ষন করে তার সন্তানকে দেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করা উচিত।

 এই দুধ কোন পরিস্কার কাপ বা চামুচে করে দেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে একই ধরনের সংক্রমন প্রতিরোধ সতর্কতা অনুসরণ করতে হবে। 

আমি হয়রানি, বৈষম্য ও সামাজিক কলঙ্কের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। যা ঘটছে তা প্রকাশ 

করার সবচেয়ে ভাল উপায় কি?

করোনা ভাইরাস নিয়ে আপনি উদ্বিগ্ন হলে তা মেনে নেয়া যায়। কিন্তু ভীতি ও সামাজিক কলঙ্ক একটি খারাপ অবস্থাকে

 আরও খারাপের দিকে নিয়ে যায়। উদাহারনস্বরূপ বলা যায়, বিশেষত এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে খবর আসছে যে

 ভাইরাস আক্রান্তরা মানসিক, এমনকি শারীরিক ভাবেও নিগৃহীত হচ্ছে। জরুরী জনস্বাস্থ্যে অবস্থা আক্রান্ত সকলের 

জন্য বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত থাকা এবং একে অপরের প্রতি সদয় এবং সহায়ক হওয়া 

এক্ষেত্রে জরুরী। ভাষা ব্যবহারের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, এবং বিদ্যমান স্টেরিওটাইপগুলিকে স্থায়ীত্ব দেয় এমন ভাষার 

ব্যবহার করা মানুষকে নিজের এবং তাদের সম্প্রদায়ের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করতে এবং প্রয়োজনীয় 

পদক্ষেপ নিতে বিরত করতে পারে।

আপনার সন্তান, পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে করোনভাইরাস সম্পর্কে কি করা যাবে এবং কি করা যাবে না সে বিষয়ে কিছু পরামর্শ:

যা করা যাবে: নতুন করোনভাইরাস রোগ সম্পর্কে কথা বলুন (কোভিড-১৯)

যা করা যাবেনা: রোগের সাথে এর ভৌগলিক অবস্থান বা জাতিসত্তা সংযুক্ত করা যাবে না। মনে রাখবেন, ভাইরাসটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী,  জাতি বা বর্ণের মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে না।

যা করা যাবে: কোভিড-১৯ আছে এমন লোক সম্পর্কে, কোভিড-১৯ এর জন্য চিকিত্সা গ্রহন করছে এমন লোক সম্পর্কে, কোভিড-১৯ থেকে সুস্থতা লাভ করেছেন এমন লোক সম্পর্কে বা কোভিড-১৯ সংক্রমনের পরে মারা যাওয়া লোক সম্পর্কে কথা বলা যাবে।

যা করা যাবেনা: এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কোভিড-১৯ এর "শিকার" হিসাবে উল্লেখ করা যাবেনা

যা করা যাবে: কোভিড-১৯ ব্যক্তিদের সংক্রমনের বিষয়ে কথা বলুন।

যা করা যাবেনা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত লোকেরা "অন্যকে সংক্রামিত করে" বা "ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়"  - এসব বলা যাবে না কারণ এটি ইচ্ছাকৃতভাবে সংক্রমণ ছড়ানো বোঝায় এবং দোষ চাপিয়ে দেয়।

যা করা যাবে: বৈজ্ঞানিক তথ্য এবং সর্বশেষ অফিসিয়াল স্বাস্থ্য পরামর্শের উপর ভিত্তি করে কোভিড-১৯ এর ঝুঁকি সম্পর্কে সঠিকভাবে কথা বলুন।

যা করা যাবেনা: অসমর্থিত গুজবের পুনরাবৃত্তি এবং আতঙ্ক ছড়ায় এমন ভাষা ব্যবহার করা যেমন "প্লেগ", "অ্যাপোক্যালিপস" ইত্যাদি।

যা করা যাবে: ইতিবাচকভাবে কথা বলুন এবং হাত ধোয়া সম্পর্কিত টিপস অনুসরণ করে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থার উপর জোর দিন। বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে এটি এমন একটি রোগ যা তারা কাটিয়ে উঠতে পারে। নিজেকে, প্রিয়জনদেরকে এবং সবচেয়ে দূর্বলকে সুরক্ষিত রাখতে আমরা সকলেই নিতে পারি এমন সহজ পদক্ষেপ।

No comments

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();